একটি ধ্বংসাত্মক মহাপাপ

হালাল-হারাম

হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বর্ণনা করেছেন যে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সকল উম্মতকে সতর্ক করে তিনি বলেছেন اجْتَنِبُوا السَّبْعَ الْمُوبِقَاتِ অর্থ তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক মহাপাপ থেকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকবে। যেকোনো কাবিরা গুনাহ মহাপাপ এই জাতীয় জিনিসগুলোই মানুষকে ধ্বংস করে তার দুনিয়া ও আখেরাত ধ্বংস করে। কিন্তু এই কাবিরা গুনাহ এর মধ্যেও আবার বিশেষ সাতটি কবিরা গুনাহ রয়েছে যার একটি হলো مهلكات (মোহলিকাত) নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নবী পথ প্রদর্শক, আমরা তার উম্মত যে কারণে তিনি আমাদেরকে গুনাহ থেকে বিরত থাকতে নির্দেশনা প্রদান করেছেন। কারণ তিনি মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের এই পথপ্রদর্শক রাহবার হিসেবেই আগমন করেছেন। তিনি আমাদের সকলের জন্য রহমত একমাত্র তিনিই কেয়ামতের দিন আমাদের সকলের জন্য শাফায়াত করবেন। তাই তার বর্ণনা অনুযায়ী যে সাতটি বিষয় তিনি বলেছেন এরমধ্যে একটি বিষয় আজ আমরা জানবো ইনশাআল্লাহ।

আসলে প্রকৃত বুদ্ধিমান প্রকৃত জ্ঞানী তো ওই ব্যক্তি যে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রত্যেকটি কথার উপরে আমল করার চেষ্টা করে। প্রিয় নবীর নির্দেশনা অনুযায়ী নিজের জীবনকে পরিচালনা করে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে তার প্রেরিত পথপ্রদর্শকের পথনির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের জীবনকে পরিচালনা করার তৌফিক দান করুন। আমীন!

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সাতটি ধ্বংসাত্মক মহাপাপ থেকে আমাদেরকে বিরত থাকার জন্য বিশেষভাবে বলেছেন এই সাতটি পাপ ছাড়াও আরো অনেক মহাপাপ রয়েছে যেমন সকল কবিরা গুনাহ এগুলো থেকেও আমাদের প্রত্যেককে বেঁচে থাকতে হবে। কারণ এগুলোই আমাদেরকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে। তবে সাতটি বিষয় বিশেষভাবে বলার কারণ হলো এগুলো কাবিরা গুনাহ এর মধ্যেও বিশেষ বা মহাকাবিরা গুনাহ। যেমন নাকি বলা যেতে পারে মহাপাপ এর চেয়েও মহাপাপ বা ভয়াবহ মহাপাপ। যে কারণে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে বলেছেন اجْتَنِبُوا السَّبْعَ الْمُوبِقَاتِ তোমরা সাতটি মহাপাপ থেকে বেঁচে থাকো। তখন সাহাবীরা বললেন قالوا: يا رسول الله، وما هن অর্থাৎ হে আল্লাহর নবী সেই সাতটি ধ্বংসাত্মক মহাপাপ কি কি…? নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন সে সাতটি অপরাধের কথা বলেছেন।

সর্বপ্রথম তিনি যে বিষয়টি বলেন সেটি হল الشرك بالله আল্লাহর সাথে শরিক সাব্যস্ত করা। আসলে আল্লাহ তো এক এবং অদ্বিতীয় তার কোন শরীক নেই পূর্বেও কোনদিন তার সঠিক ছিল না এবং ভবিষ্যতেও কখনো তার কোন শরীক থাকবে না তাই কেউ যদি আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করে তাহলে তার যত নেক আমোলই থাকুক না কেন নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত, তসবিহ, দান, সদকাহ মুহূর্তেই তার এই সকল কিছু শেষ হয়ে যাবে। তার সকল আমল মুছে যাবে ডিলেট হয়ে যাবে তার আমলের খাতা থেকে সকল কিছু একদম পরিষ্কার হয়ে যাবে। যদি সে শুধুমাত্র শিরক এর অপরাধ এ লিপ্ত হয়। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে বলেন
وَلَقَدْ أُوحِيَ إِلَيْكَ وَإِلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكَ لَئِنْ أَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ
আল্লাহ তাআলা বলেন হে রাসূল আপনিসহ পূর্বে যারা নবী ছিলেন সকলের উপরেই একটি আদেশ ছিল যে আপনি যদি নবী হওয়া অবস্থায় ও কোন শিরকের গোনায় লিপ্ত হন তাহলে আপনার আমল এবং আপনার সকল কর্ম এগুলো অবশ্যই বরবাদ হয়ে যাবে। এবং আপনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবেন। যদি শুধুমাত্র আপনি শির্ক এর অপরাধ করেন।

বর্তমান সমাজে আমাদের মধ্যে অনেকে এমন আছে মাজার বা এজাতীয় কিছু স্থানে গিয়ে একজন মৃত ব্যক্তির কবরের কাছে বা একজন জীবিত কোন ব্যক্তির কাছে তাকে সেজদা করে তার কাছে চেয়ে বিভিন্ন হারাম পন্থা অবলম্বন করে মহান স্রষ্টার কাছে যেভাবে চাই সেভাবে চেয়ে সন্তান দাবি করে বিভিন্ন আশা-আকাঙ্ক্ষা তার মাধ্যমে পূরণ করার চেষ্টা করে। এবং এটা বিশ্বাস করে যে তার কাছে ক্ষমতা রয়েছে যে সে তাকে সন্তান দান করতে পারে। এবং তার প্রয়োজনীয় যে সকল চাওয়া পাওয়া রয়েছে সেগুলো সে পূরণ করতে পারে। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে এগুলোর একমাত্র ক্ষমতাধর একমাত্র পরিপূর্ণতা দানকারী মহান আল্লাহ তায়ালা তাই তিনি ছাড়া অন্য কারোর নিকটে সকল কিছুর দাবি ও আশা রাখা শিরিক এর ওই অন্তর্ভুক্ত। অনেকে বুঝে ও না বুঝে এ বিষয়গুলো করে থাকে আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে ইসলামের সকল বিষয়গুলোর উপর সঠিক জ্ঞান রাখার তৌফিক দান করুন এবং এর সকল বিষয়গুলোতে আমাদেরকে আল্লাহ তায়ালা তার কুদরতি হাত দ্বারা সাহায্য করুন। আমিন!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *